ব্লগিং টিপস, স্টিমিট টিপস, স্বাস্থ্য ও মন ঠিক রাখার উপায়, ইংরেজিতে কথা বলার সহজ সরল উপায়, অসমাপ্ত ভালোবাসার কাহিনী,

বৃহস্পতিবার, ২ আগস্ট, ২০১৮

একটা অসমাপ্ত ভালোবাসার কাহিনী,( ব্যার্থ প্রেম)-a heart touching sad love story

একটা অসমাপ্ত ভালোবাসার কাহিনী,( ব্যার্থ প্রেম)-a heart touching sad love story

আমি রকি আজ থেকে দুই বছর আগেকার কথা, মাধ্যমিক পরিক্ষা দিয়েছিলাম আর ভাবছিলাম রেজাল্টের কথা। আমি খুব একটা ভালো ছাত্র ছিলাম না তাই ভাবছিলাম এই পড়াশুনা আর আমার দ্বারায় হবে না আমি স্কুল থেকে বিদায় নিয়ে দাদার গ্যারেজে কামে জয়েন করবো। আব্বু কে বলে দিলাম আমি আর পড়াশুনা করবো না, আব্বু খুব বকেছিল এবং শেষ মেশ স্কুল ছেড়ে দেওয়ার কথা ফাইনাল হয়ে গেল। এদিকে পরিক্ষার রেজাল্ট এল আমি পাশ করেছি। যাই হোক এবার একটু চিন্তা মুক্ত হলাম, কিন্তু ভাগ্যের চাকা অন্যদিকে ঘুরছিলো। আমাদের বাড়িটা ছিলো স্কুলের সামনে, বাড়ি থেকে স্কুলের সব ছেলেমেয়ে দের দেখতে পেতাম। এখন স্কুলে বিভিন্ন জায়গা থেকে ছাত্র ছাত্রী এসে ভরতি হচ্ছে।
ব্যার্থ প্রেম



বাড়ির বাংলায় দাঁড়িয়ে ছিলাম আর স্কুল টা কে দেখছিলাম। হঠাত দেখি একটা মেয়ে স্কুল ড্রেসে স্কুলে ঢুকছে, মেয়েটা কে এই প্রথম দেখছি। অন্য স্কুল থেকে এসেছে হবে মনে মনে ভাবলাম। মেয়েটা কে প্রথম দেখা দেখাতে আমার মন টা কেমন করে উঠল, মেয়েটা কে দেখার জন্য এক পা এক পা করে স্কুলের দিকে যেতে থাকলাম, অন্য বন্ধুদের জিঙ্গাসা করে জানতে পারলাম মেয়েটা একাদ্বশ শ্রেনী তে পড়ে, আমার মনে হল মেয়ে টা যেন আমার জন্যই এসেছে। মেয়েটা শুধু দেখতেই ইচ্ছে করত। অবশেষে আমি আবার স্কুলে ভরতি হোওয়ার জন্য আব্বু কে বললাম এবং ভরতি ও হয়ে গেলাম। মেয়েটা কে দেখেই আমি যেন পুরোটায় বদলে গেলাম, প্রতিদিন স্কুলে যেতে লাগলাম। মেয়েটার নাম জানতে খুব ইচ্ছে করছিলো কিন্তু জিঙ্গেস করতে সাহস পাচ্ছিলাম না, কিছু দিন এ রকম উদাস মন নিয়ে ঘুরে বেড়াতে থাকি আর মনে মনে শুধু মেয়েটার কথায় ভাবতাম। অবশেষে জানতে পারলাম মেয়েটার নাম সীমা। সীমা কে নিয়ে আমি সব সময় কল্পনার জগতে ভেসে বেড়াতাম। সব সময় ওর চোখে চোখ দিয়ে দেখতাম ওকে।
ভালোবাসার সময়



হঠাত একদিন সীমা স্কুলে আসেনি, সেদিন মনে হচ্ছিলো ওই দিন টাই যেন আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ দিন। কেন জানি না সীমা কে একদিন না দেখে আমি থাকতে পারতাম না। বন্ধুদের কে এই কথাটা জানালে তারা বলে আমি নাকি প্রেমে পড়েছি, হ্যা  আমি সত্যিই সীমার প্রেমে পড়ে গেছি। তবে তাকে এই প্রেমের কথা বলতে পারি নি। একদিন সীমার জন্মদিনে কিছু বন্ধু কে আমন্ত্রন করে তাতে আমি ও ছিলাম, মনে মনে ভাবলাম এই বুঝি সীমা কে কথা বলার দিন চলে এসেছে। জন্মদিনে গিয়ে প্রথম কথা বলেছিলাম happy birth day সীমা, সীমা ও মধুর কন্ঠে বলেছিলো thank you রকি। সীমার আওয়াজ টা যেন এসে আমার বুকে বাধল, পরের দিন স্কুলে গিয়ে সীমার সাথে একটু  একটু কথা বলা চলতে লাগলো ধিরে ধীরে আমরা ভালো বন্ধু ও হয়ে গেলাম।

অসমাপ্ত প্রেমের কাহিনী...


আমি সীমা কে খুব ভালোবাসতাম, কিন্তু এই কথাটা তাকে কি করে জানাই, সীমা আমাকে ভালো বন্ধু মনে করতো, এই বন্ধুত্ত হারানোর ভয়ে ভালোবাসি কথাটা তাকে বলতে পারতাম না। এভাবে কেটে গেল দুই মাস, একদিন টিফিনের সময় সীমা আর আমি এক জায়গায় বসে গল্প করতে করতে ওর ফোন নাম্বার টা চেয়ে ফেলি ও প্রথমে দিলো না কিন্তু আমি অভিমান করাতে নাম্বার টা দিলো।

 ।সীমার মোবাইল নাম্বার পেয়ে আমি খুশিতে আটখানা, স্কুল ছুটি হয়ে গেল আমরা নিজের নিজের বাড়ি চলে গেলাম, শুরু হয়ে গেল সীমার আর আমার ফোনে কথা বলা। অনেক মজার মজার কথা বলত সীমা আর হাসত। যেমন মিস্টি মেয়ে তেমনি ছিল তার হাসি।


একদিন আমি সীমা কে বলে ফেললাম আমার মনের কথা, সীমা আমি তোমাকে ভালোবাসি, আমি তোমাকে পেতে চাই আমার করে, আমি তোমাকে ছাড়া বাচব না। কথা গুলো যেই বলা ওমনি ফোন কেটে দিল, আমি তো ভয় খেয়ে গেলাম এই হয়ত সীমার আর আমার বন্ধুত্ত শেষ। বার বার ফোন লাগায় কিন্তু ফোন কেটে দেয়। কোন রকমে ওই রাত টা কাটিয়ে পরের দিন স্কুলে গিয়ে সীমার সাথে দেখা হয়, দেখি সীমা আমার দিকে কি রকম করুন দৃস্টি তে তাকাতে থাকে, সীমার ওই কাজল কালো চোখ যেন কিছু বলতে চাইছে, আমি ও সীমার দিকে তাকাতে থাকি বার বার। একবার সীমার একবান্ধবী একটা ফাকা জাইগায় আমাকে ডেকে নিয়ে যায় সেখানে দেখি সীমা মুখ লুকিয়ে  দাঁড়িয়ে রয়েছে মনে হচ্ছে যেন আমার ওপেক্ষা তেই আছে। সীমার সাথে দেখা হতেই দেখি আমাদের বাংলা স্যার ক্লাসে ঢুকে পড়েছে, যাহ! কোন কথায় হল না, আমি শুধু সীমার ওই না বলা কথার অপেক্ষায় থাকি, তার উত্তরের আশায় আমার মন ছটফট করতে থাকে। পরের দিন সীমার এক বান্ধবী একটা চিঠি আমাকে দিল আর বলল এটা সীমা দিয়েছে। বাড়িতে এসে চিঠি টা খুলে দেখি, চিটি তে লেখা প্রিয় রকি  আমি অনেক আগে থেকেই তোমাকে ভালোবাসো, আমি ও তোমাকে প্রথম দেখা তে ভালোবেসে ফেলেছি কিন্তু বলতে পারি নি কারণ আমি যে শিকলে বাধা, আমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে অন্য এক জনের সাথে তাই আমার ভালোবাসার কথা তোমায় বলতে পারি নি কিন্তু আমি ও আর না বলে থাকতে পারলাম না, আমি তোমায় খুব ভালোবাসি খুব। আর আমি তোমাকে কোনদিন হারাতে চাই না।




এভাবে শুরু হল আমার ও সীমার প্রেম কাহিনী কিন্তু আমি ভেবেই পাচ্ছিলাম না এর শেষ পরিণতি কি হবে। কারণ তার তো বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। যাই হোক শুরু হল ক্লাস ফাকি দিয়ে সীমার সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে কথা বলা, সারারাত ফোনে আমাদের নতুন প্রেম নিয়ে অনেক মজা করতাম কখনো বা হাসি কখনো অভিমান কখনো রাগারাগি এভাবে ছয় মাস কেটে গেল।স্কুলে গরমের ছুটি দিয়েছে একমাস সীমার সাথে দেখা করতে পারবো না তাই ছুটির পরে দুজনে স্কুলের পিছনে কিছু করুণ দয়ামায়া যুক্ত কথা, ভালো থেকো নিজের খেয়াল রেখো এসব বলে নিজের নিজের বাড়িতে চলে যায়। কিন্ত আমি ভাবতে পারি নি এই একমাস আমাকে এতটা কস্ট দিতে এসেছিল, এই মাস টাই যেন আমার সারা জীবন শেষ করতে এসেছিল। একদিন ফোনে সীমা আমাকে বলে ওকে নাকি বর পক্ষ দেখতে এসেছিল আজ ওদের বিয়েটা নাকি খুব তাড়াতাড়ি দিয়ে দেবে। সীমা কান্নার মতো করে বলছে তুমি কিছু একটা কর রকি আমি এ বিয়ে করতে চাই না আমি শুধু তোমাকেই আমার জীবন সঙ্গি বানাতে চাই, চলো আমরা পালিয়ে বিয়ে করি। কিন্তু আমি ওকে সান্তনা দিই কালকে তোমার বাড়ি গিয়ে তোমার আব্বু কে বলবো আমাদের কথা আর তোমাকে তোমার আব্বুর কাছ থেকে ভিক্ষা চেয়ে নিবো। যেই বলা সেই কাজ পরের দিন গেলাম সীমাদের বাড়ি আর সীমার মা বাবার কাছে বললাম আমাদের প্রেমের কথা কিন্তু ওরা মেনে নিল না উলটো আমাকে বড় বড় কিছু কথা শুনিয়ে দিল, আমি ও বলে দিয়েছিলাম অনেক কথা, সীমার আব্বুর সাথে অনেক কথা কাটা কাটি চলছিল সেই সময় সীমা এসে আমাকে একটা চড় মেরে বলে যাও বাড়ি থেকে বের হয়ে আমি তোমায় ভালোবাসি না , সত্যিই অনেক বাড়াবাড়ি হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু যেই সীমা কে আমার জীবনের চেয়ে বেশী ভালোবাসি সেই সীমা আমাকে চড় মেরে অপমান করে তাড়িয়ে দিল এই টা মেনে নিতে পারছিলাম না তাই সীমার উপরে আমি মনে মনে অনেক রেগে গিয়েছিলাম, ফোন ও আর হই নি আমাদের মধ্যে ।কোন রকমে তিন দিন খুব কস্ট বুকে নিয়ে কাটালাম।


আমার রাগের পরিণতি..

ভালোবাসার পরিণাম


পরের দিন রাত্রে সীমা তিন চার বার ফোন করে আমার মোবাইলে আমি রিসিভ করি নি এবং মোবাইল silent করে দিই। সকালে উঠে বাড়ি থেকে বার হয়ে দেখি কিছু দূরে একটা রক্ত মাখা দেহ পড়ে আছে, সব লোক জমা হয়ে যায় এবং রক্ত মাখা দেহ টা দেখে আমার তো চক্কর চলে আসে আর মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়। সেই দেহ টি ছিল আমার প্রিয়তমা সীমার দেহ। মোবাইল খুলে দেখি ৬ টি মিসড কল এবং একটা মেসেজ, মেসেজে লেখা ছিল, প্রিয় রকী তোমার অভিমান আমি সহ্য করতে পারি নি, আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি শুধু তোমাকে পাওয়ার জন্য আর রাস্তায় আমার এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে,আমার বলার অনেক কথা ছিল কিন্তু আর বলা হল না তুমি শেষ বারের মত একবার আমায় দেখা দাও আমি পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি তুমি ভালো থেকো আর পারলে আমায় ক্ষমা করে দিও। এভাবেই শেষ হয়ে গেল আমার তিলে তিলে গড়া ভালোবাসা, আজ ও আমি ওই রক্ত মাখা দেহ টা ভুলতে পারি নি আমার বেচে থাকা যেন মরণ যন্ত্রনার সমান । তো বন্ধু রা সময় থাকতে ভালোবাসার মুল্য দিতে হয়, নই তো নিজেকেই কাদতে হয় সারা জীবন। ভালো থাকবেন আর ভালোবাসার মানুষের খেয়াল রাখবেন। এই গল্প টি ভালো লাগলে অবশ্যয় জানাবেন কমেন্ট করে আর বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন।

এটাও পড়ুন....

কাদিয়ে দেবে এই ভালোবাসার কাহিনী,ভালোবাসার পরিণাম মৃত্যু- fail in love, heart touching love story... 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন